সিটিজেন চার্টার:
সিটিজেন চার্টার অর্থ নাগরিক সনদ। একটি দেশের সরকারী অফিসে জনগণ কী কী সেবা পাবে তা জনগণকে পরিষ্কারভাবে যে সনদের মাধ্যমে জানানো হয় তাই সিটিজেন চার্টার। সরকারের কোন প্রতিষ্ঠান কি সেবা দেয় তা জানার সকলের অধিকার রয়েছে।
সিটিজেন চার্টার বা নাগরিক সনদের উৎপত্তি:
১৯৯১ সালে জন মেজরের নেতৃত্বাধীন রক্ষণশীল সরকারের শাসনামলে নাগরিক সনদের উৎপত্তি হয় যুক্তরাজ্যে। সে সময় দেশটিতে একটি প্রশ্ন খুব ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছিল। তা হল, বেসরকারি সংস্থাগুলো যদি মানসম্পন্ন সেবা দিতে পারে তবে সরকারি সংস্থাগুলো কেন পারবেনা। নাগরিকেরা আরও প্রশ্ন করতে শুরু করে যে, সরকারি সেবার মান যদি ভাল না হয় তাহলে জনগন সেই সেবার জন্য করের মাধ্যমে যে টাকা দিয়েছে তা কেন ফেরত পাবে না- যেমনটি তারা কোন বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা সেবা সংস্থার কাছ থেকে ফেরত পেত? মূলত এই প্রশ্নগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যে নাগরিক সনদ কর্মসূচির সূত্রপাত হয়, যার মূল লক্ষ্য ছিল দেশের নাগরিকদের জন্য সরকারি সেবার গুণগত মানের অব্যাহত উৎকর্ষ সাধন যাতে তা ব্যবহারকারীদের চাহিদা ও আকাঙ্খা পূরণে সক্ষম হয়।
নাগরিক সনদ প্রনয়নের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণের জন্য সরকারি সেবা প্রাপ্তি সহজতর করা এবং সেবার মানোন্নয়ন করা।
সিটিজেন চার্টার বা নাগরিক সনদের চারটি প্রধান উদ্দেশ্য চিহ্নিত করা যায়-
প্রথমত: জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের প্রত্যাশার সাথে সংগতি রেখে সেবার মান নির্ধারণ এবং তাদের মতামত নিয়ে নির্দিষ্ট সময় অন্তর নিয়মিত তা পুনঃ নির্ধারণ, যাতে করে অব্যাহতভাবে সেবার মানোন্নয়ন এবং সেবাকে জনবান্ধব করা সম্ভবপর হয়।
দ্বিতীয়ত: জনগণকে তাদের প্রাপ্য অধিকার সম্পর্কে তথ্য প্রদানের মাধ্যমে ক্ষমতায়িত করা যাতে করে তারা সেবা প্রদানকারীদের কাছে সে সব অধিকার দাবি করতে পারে এবং বিভিন্ন পদ্ধতিতে (যেমন, অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা) সেবা প্রদানকারীদের সামাজিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
তৃতীয়ত: সেবা প্রদানকারীদের সামর্থ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন উদ্যোগের (যেমন, সহায়তা কাউন্টার প্রতিষ্ঠা) মাধ্যমে তাদের আচরণের উন্নয়ন এবং প্রতিষ্ঠানে এক ধরণের সৌজন্যতার সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো।
চতুর্থত: সেবার মানোন্নয়ন, জনগণের অংশগ্রহণ, অভিযোগ নিষ্পত্তি প্রভৃতি উদ্যোগের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস